সিলেটের ডাইরি | জাবেদ আহমেদ, প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড
ছবিতে লেখক জাবেদ আহমেদ, প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড |
সিলেটের ডাইরি
সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং সুনামগনঞ্জ এ চারটি জেলা নিয়ে সিলেট বিভাগ। সিলেট বিভাগ জুড়েই পর্যটন আকর্ষণের ছড়াছড়ি। বছরে প্রায় ২৫-৩০ লক্ষ পর্যটক বৃহত্তর সিলেটের পর্যটন আকর্ষণগুলোতে বেড়াতে যায়। পর্যটন শিল্প-কে ঘিরে একটি চমৎকার অর্থনীতিও এখানে গড়ে উঠেছে। অসংখ্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
এর প্রভাবে স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মানও উন্নত। সিলেটের অনেক পর্যটন আকর্ষণ রয়েছে যেখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হোটেল/মোটেল এখনও গড়ে উঠেনি। কাজেই পর্যটকগণ এ সকল রিমোট গন্তব্যে গিয়ে দ্রুত শহরে ফিরে যায়। অর্থাৎ পর্যটকগণ এ সকল গন্তব্যে গিয়ে Day-long tour করে থাকে। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনেক আকর্ষণ না দেখেই পর্যটকগণকে ফিরতে হয়। আমাদের দেশের স্বল্প আয়ের পর্যটকগণ হয়তো সিলেটে জীবনে একবারই যাবেন। কোন একটি আকর্ষণের খুব নিকটে গিয়েও সময়ের স্বল্পতার কারণে সেটি না দেখতে পারার আফসোস তার সারাজীবন থেকে যায়। এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ILO এর সহায়তায় সিলেটের জাফলং এর খাসিয়া পুঞ্জি-তে কমিউনিটি বেইসড ট্যুরিজমের আওতায় হোমস্টে ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। এখানে বলে রাখা ভাল, সিলেটে আসা পর্যটকগনের প্রধান গন্তব্যই হচ্ছে জাফলং। সেখানে গিয়ে তারা একসাথে চা-বাগান, মায়াবী ঝর্ণা এবং জিরো-পয়েন্ট দেখতে পারেন। খাসিয়া পুঞ্জির হোমস্টে-তে আমার এক রাত থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেটি এ নিবন্ধে বলার চেষ্টা করব। এবারের সিলেট ভ্রমণ ছিল সস্ত্রীক। আমরা ১৬/৭/২০২৫ তারিখ সকাল ৮.০০ টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সিলেটের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ি এবং ৮.৪০ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছি। বিমানের সেবার মান খারাপ ছিল না। লাগেজ পেতেও দীর্ঘক্ষন অপেক্ষা করতে হয়নি। শহরের Crystal Rose নামে একটি হোটেল উঠি। হোটেলটি থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বেশি দূরে নয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে, জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সভায় অংশগ্রহণ করি। এ কমিটির সদস্য সংখ্যা ৩২ জন হলেও মাত্র ১২ জন সভায় অংশ নেন। তার মধ্যে সরকারি সদস্যই বেশি। সম্ভবত: ৩ জন ছিলেন বেসরকারি সদস্য। দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটি বিদ্যমান রয়েছে। এ কমিটিগুলোকে কিভাবে আরও সক্রিয় করা যায় সেটি ছিল সভার মূল এজেন্ডা। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সময়ের স্বল্পতার কারণে বিষয়ের ওপর খুব বেশি আলোচনা করা যায়নি। তবে কমিটি সক্রিয় করার জন্য দু/একটি ভাল পরামর্শ পাওয়া গেছে। সভা শেষ করে হযরত শাহ্জালাল (রাঃ) এর মাজার শরীফ জিয়ারত করতে যাই। রুবী অর্থাৎ আমার স্ত্রীও এ সময় আমার সাথে ছিলেন। যোহরের নামাজের সময় হওয়ায় নামাজ আদায়ের জন্য আমি মাজার সংলগ্ন মসজিদে প্রবেশ করি। রুবী যায় মহিলাদের জন্য নির্ধারিত প্রার্থনা কক্ষে। নামাজ এবং মাজার জিয়ারত শেষে ফিরে এসে গাড়ীতে উঠি। সেখানে দেখি রুবী নামাজ আদায় করছে। সে জানালো মহিলাদের জন্য নির্ধারিত প্রার্থনার স্থানটি খুবই ছোট সেখানে বসার মত জায়গা পায়নি। এখানে আর একটি কথা বলে রাখা ভাল। বাংলাদেশে যে কয়টি স্থানে রিলেজিয়াস ট্যুরিজম হয় তার মধ্যে সিলেটের হযরত শাহজালাল (রাঃ) এর মাজার অন্যতম। মহিলা নামাজিদের সুবিধা বৃদ্ধির জন্য খুব সহজেই মহিলাদের প্রার্থনার স্থানটি বড় করা যেতে পারে। মাজার কমিটির মুতওয়াল্লী সাহেব এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারেন। সেদিনই বিকেলে গেলাম কোম্পানীগঞ্জের সাদা-পাথর পর্যটন কেন্দ্রে। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় খুব বেশি পর্যটক দেখা যায়নি। স্থানীয় দোকানীরা বলছিলেন ছুটির দিনগুলোতে বহু পর্যটক আসে। খুবই আকর্ষণীয় একটি পর্যটন কেন্দ্র। তবে এখনও পর্যটকদের জন্য কোন ধরনের সুবিধা সৃষ্টি করা যায়নি। ০৫ (পাঁচ) বছর আগে যা দেখেছিলাম, আজও একই অবস্থা বিদ্যমান। বছর চারেক আগে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড সিলেট জেলা প্রশাসনের অনুকূলে সাদা-পাথর পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নের জন্য ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। নানান আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে সেই বরাদ্দের টাকাও ব্যয় করা যায়নি। তাই সাদা-পাথর পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নও হয়নি। সিলেটের বর্তমান জেলা প্রশাসক তার পূর্বসূরীদের মতই বললেন খুব সহসাই সাদা-পাথর পর্যটন কেন্দ্র উন্নয়নের কাজ শুরু হবে। আল্লাহ ভরসা। যা হোক সে রাত্রে খেতে গেছিলাম সিলেট শহরের পানসি নামক রেস্তোরায়। সাতকড়া দিয়ে রান্না করা গরুর মাংস খাওয়ার লোভেই সেখানে গেছিলাম। রেস্তোরাটিতে মানুষের ভীড় দেখে মনে হচ্ছিল যে, সিলেট শহরের কোন মানুষ বুঝি রাত্রে রান্না-বান্না করেন না।
পরের দিন অর্থাৎ ১৭/৭/২০২৫ তারিখ সকালে দুটো প্যারালাল ওয়ার্কশপ ছিল। আমরা যে হোটেলে ছিলাম সেই হোটেলেই ছিল ওয়ার্কশপের ভেন্যু। পর্যটক স্টোকহোল্ডারদের নিয়েই ওয়ার্কশপ। সরকারি এবং বেসরকারি সকল স্টোকহোল্ডারগন এ ওয়ার্কশপ দুটোতে আমন্ত্রিত ছিলেন। সরকারি স্টোকহোল্ডারদের জন্য নির্ধারিত ওয়ার্কশপটি আমি পরিচালনা করি আর বেসরকারি স্টোকহোল্ডারদের নিয়ে ওয়ার্কশপটি বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের উপ-পরিচালক জনাব মাযহার পরিচালনা করেন। ওয়ার্কশপ দুটোতে উপস্থিতি ছিল শতকরা ১০০ ভাগ। খুবই সফল ওয়ার্কশপ বলেই ধরে নেয়া যায়। সেদিনই বিকেল ৪ টা নাগাদ ভাড়া করা Micro-Bus নিয়ে আমরা জাফলং এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। সঙ্গে রুবী, ট্যুরিজম বোর্ডের উপ-পরিচালক মাযহার, ওর মামাতো বোন আশফিকা এবং ট্যুরিজম বার্ডের কর্মী চিন্ময়। আশফিকা সম্পর্কে একটু বলতে হয়। খুবই সুশ্রী মেধাবী এ মেয়েটি এ বছর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়েছে। চট্টগ্রামের মেয়ে আশফিকা মাত্র ১০ দিন আগে পড়াশুনার উদ্দেশ্যে সিলেটে এসেছে। মাযহার অসাধারণ দক্ষতায় আমাদের এ ট্যুর প্রোগ্রামটি ম্যানেজ করছে। সে হচ্ছে ট্যুর ম্যানেজার। তাকে সহযোগিতা করছে চিন্ময়। জাফলং যাওয়ার পথে লালাখালে থামলাম। সেখানে নৌকা ভাড়া করে লালাখাল ঘুরলাম। এ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর এ পর্যটন আকর্ষণটি পর্যটন প্রেমীদের জীবনে অন্তত: একবার আসা উচিত। প্রায় দেড় ঘন্টা পর আমরা লালাখাল থেকে ডাংগায় উঠলাম। এবার Micro-Bus যাত্রা শুরু করল জাফলং এর উদ্দেশ্যে। আমি এবং রুবী ছাড়া সবাই ফিরে গেল সিলেটে। প্রায় ৪০ মিনিট পর আমরা জাফলং এর বল্লার ঘাটে গিয়ে পৌঁছলাম। সরিনা নামে একজন খাসিয়া ভদ্র মহিলা যিনি আমাদের Tour Guide তিনি আমাদেরকে জবপবরাব করলেন। খেয়া নৌকায় পিয়ান নদী পার হলাম। উঠলাম এবার অটো রিক্সায়। অত্যন্ত Smart Driver। ওর নাম ডালিম। খাসিয়া গ্রামের সরু রাস্তা দিয়ে প্রায় আধা ঘন্টা চলার পর প্রথমে পেলাম সংগ্রাম পুঞ্জি তার পরেই খাসিয়া পুঞ্জি। তখন রাত প্রায় ০৮ টা। আমাদের জন্য Booking দেয়া নির্ধারিত বাড়ী সেজিরম হোমস্টেতে উঠলাম। এটি ওয়েলকাম লিম্বা বাবুর বাড়ী। বাড়ীর ড্রইং রুমে আমরা বসলাম। গৃহকত্রী এবং তার একজন কিশোরপুত্র আমাদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানালেন।
অল্প কিছু পরেই গৃহকর্তা জনাব ওয়েলকাম লিম্বা ঘরে ফিরলেন। মধ্যবয়সী খাসিয়া পুরুষ। অতিশয় বিনয়ী ভদ্র গোছের মানুষ। তিনি খাসিয়া পুঞ্জির প্রধান। এরই মধ্যে আমাদের চা-নাস্তা দেয়া হয়েছে। গৃহকত্রীর নিজ হাতে বানানো গরুর দুধের চা। খুব ভাল লেগেছে খেতে। গল্পে গল্পে গৃহ কর্তা জানালেন তার হোমস্টে-তে থাকার জন্য রুম প্রতি ১৫০০/- টাকা দিতে হবে। এর মধ্যে সকালের নাস্তা অন্তর্ভুক্ত। লাঞ্চ ও ডিনার পাশের একটি খাসিয়া রেস্তোরাতে গিয়ে সারতে হবে। সেটিও খুব কাছেই। ৩/৪ টি বাড়ী পরেই। এ রেস্তোরার রান্না-বান্না খাসিয়া বাড়ীতেই হয়। খেতে হয় রেস্তোরায় বসে। রাতের খাবার আমরা এখানেই খেলাম। সুন্দর রান্না। ভাত, ডাল, ভাজী এবং মুরগীর মাংস। দাম একটু চড়া মনে হল। আর একটু কম হলে ভাল হত। এ বিষয়টি পুঞ্জি প্রধান দেখবেন বলে আশা রাখি। খাওয়া-দাওয়া শেষে নিজ রুমে ফিরলাম। থাকার জন্য আমাদেরকে যে রুমটি দেয়া হয়েছে সেটি ড্রইং রুম সংলগ্ন। ছিমছাম সাজানো গোছানো কক্ষ। House Keeping এর দক্ষতায় বিছানা পত্র সাজানো হয়েছে বলে মনে হল। হোটেলে যেমন পানির বোতল, সাবান, টুথপেস্ট, টুথব্রাশ রাখা হয় এখানেও তাই। সুন্দর ধবধবে সাদা দুটো টাওয়েলও রাখা হয়েছে। কিন্তু রুমটিতে Attach বাথরুম নেই। গৃহকত্রী আমাদেরকে বাথরুম দেখিয়ে দিলেন। High কমোড এবং Low কমোড দুধরনের ব্যবস্থাই সেখানে বিদ্যমান। ক্লান্ত শরীর তাই বিছানায় গিয়েই ঘুমিয়ে পড়ি। পরের দিন সকালে নাস্তার টেবিলে গৃহকত্রীর হাতে তৈরী পরোটা, সব্জি এবং ডিমভাজি দিয়ে চমৎকার নাস্তা হল। চা এর কথা না বললেই নয়। গত সন্ধ্যায় যে চা পান করেছিলাম, সকালের চা-টা তার চেয়েও মজাদার। অনেক ধন্যবাদ গৃহকত্রী বৌদিকে।
আমরা খাসিয়া পল্লীসহ আশপাশের এলাকা ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ সময় গৃহকর্তা জানালেন Tour Guide এর পাশাপাশি তার দু’কন্যা আমাদের সাথে ঘুরতে যাবে। গৃহকর্তার দুজন কন্যা বানী এবং মেডোনা। বানী বড়, সিলেট মেট্রোপলিটান কলেজে আইন বিষয়ে অনার্স পড়ছে আর মেডোনা সিলেট Girl’s School - এ নবম শ্রেণির ছাত্রী। তারাও গত রাতে ছুটিতে সিলেট থেকে বাড়ীতে এসেছে। অটো ড্রাইভার ডালিম এবং Tour Guide সরিনা এরই মধ্যে এসে পড়েছে। সরিনা, বানী, মেডোনা, রুবী এবং আমি অটোতে করে চললাম জিরো পয়েন্টের উদ্দেশ্যে। অটো ছেড়ে নৌকায় উঠলাম। জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি গিয়ে নামলাম। ভারত অংশের ডাউকি ব্রীজের বিপরীতে দাঁড়ালাম। পাহাড়ের গায়ে দুটো পতাকা উড়ছে। এক পাশে বাংলাদেশের অন্য পাশে ভারতের। সংলগ্ন নদীতে অল্প পানিতেই পর্যটকদের ভিজতে দেখা গেল। পানি দেখলেই আমাদের পর্যটকগণ অনেক অ্যাকটিভ হয়ে পড়েন। সেখানে থেকে নৌকা করে চলে গেলাম মায়াবী ঝর্ণা দেখতে। ঝর্ণাতে প্রবাহমান পানি দেখা গেল। পর্যটকের সংখ্যাও পর্যাপ্ত। এ জায়গায় অস্থায়ী দোকানপাটের সংখ্যা অনেক বেশিই মনে হল। এটা শেষ করে চললাম চা-বাগান দেখতে। চা-বাগানেও অনেক পর্যটক দেখা গেল। চা-বাগান যাওয়ার পথে আর একটি অভিজ্ঞতার কথা না বলেলই নয়। জাফলং চা-বাগানে যেতে হয় কয়েকটি খাসিয়া পাড়া পার হয়ে। অটো চালক ডালিম একটি পাড়াতে থামলো। আমরা সকলে অটো থেকে নামলাম। এ পাড়ায় স্থানীয় খাসিয়া সম্প্রদায়ের একটি কমিউনিটি সেন্টার আছে। এখানে পর্যটকদের জন্য কয়েকটি বাই-সাইকেল রাখা আছে। আমি, মেডোনা এবং বানী সাইকেল নিয়ে আশে পাশে ঘুরলাম। কমিউনিটি সেন্টারের কেয়ারটেকার একজন খাসিয়া মহিলা। বাই-সাইকেলের ভাড়া দিতে চাইলে, তিনি নিলেন না। বাই-সাইকেল চালানোর জন্য নির্ধারিত হারে ভাড়া নেয়া দরকার। পুঞ্জি প্রধান বিষয়টি দেখতে পারেন। এই পাড়ার প্রধান রাস্তাটির ধারে একটি সুভেনীর শপ এবং তার পাশে দুটো টয়লেট দেখলাম। সুভেনীর শপটি বন্ধ থাকায় সে সম্পর্কে কিছু জানতে পারলাম না। তবে টয়লেটে গিয়েছিলাম। পাশাপাশি দুটো টয়লেট একটি পুরুষ এবং অপরটি মহিলাদের জন্য নির্ধারিত। দেখলাম টয়লেট দুটোর দরজায় Male এবং Female সুন্দর করে লিখে রাখা হয়েছে। টয়লেট থেকে বেরিয়ে ফি দিতে চাইলাম কিন্তু নেয়ার কেউ নেই। এভাবে চলতে থাকলে টয়লেট অচীরেই ভাগাড়ে পরিণত হবে। টয়লেট দুটো অবিলম্বে স্থানীয়দের মধ্যে লীজ দেয়া দরকার। পুঞ্জি প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখতে পারেন। যাহোক জাফলং এর পর্যটন আকর্ষণগুলো দেখে বেলা দুইটা নাগাদ আমরা হোমস্টে-তে ফিরলাম। সেই রেস্তোরায় বসে খাঁসিয়া ধাঁচে রান্না করা খাবার খেলাম। রুবী সেটা খেতে পারলো বলে মনে হল না। এবারে আমাদের সিলেট ফেরার পালা। সিলেট ফেরার পথে রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট দেখার জন্য নামলাম।
একটা নৌকা ভাড়া করে প্রায় ১ ঘন্টা রাতারগুল খালে ভাসলাম। সে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। নৌকার মাঝির সুরেলা কন্ঠের স্থানীয় গান স্মরণে থাকবে বহুদিন:
আমার মন বসে না শহরেইট পাথরের নগরেতাইতো আইলাম সিলেটেএই রাতারগুলে আইসে আমার মাতাল মাতাল লাগে ..................।।
লেখক:
জাবেদ আহমেদ
প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড
No comments