অপেক্ষা | হুমায়ুন আহমেদ | বুক রিভিউ
![]() |
অপেক্ষা | হুমায়ুন আহমেদ | বুক রিভিউ |
বইয়ের নাম: অপেক্ষা
লেখক: হুমায়ুন আহমেদ (১৯৪৮-২০১২)
প্রকাশকাল: ডিসেম্বর, ১৯৯৭
মানুষের জীবন কি চক্রের মত? চক্রের ভিতর ঘুরপাক খেতে খেতে অপেক্ষা করে কেউ কেউ।
তেমনি এক অপেক্ষার কাহিনী।
হুট করেই একদিন হারিয়ে যান হাসানুজ্জামান, যিনি ছিলেন পরিবারের কর্তা।
বাসায় রেখে যান, ছোট একটা ছেলে ইমন, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সুরাইয়া, মা
আকলিমা ও ছোট ভাই ফিরোজকে। যেই মেয়েটির জন্ম হয়, তার নাম রাখা হয় সুপ্রভা,
খুবই অনাদর, অবহেলায় লালিত হলেও এই উপন্যাসের বেশ মায়াবি একটা চরিত্র এই
মেয়েটি।
তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, পরবর্তীতে ইমনের পরিবারের মামা
বাড়িতে চলে যাওয়া এবং সেখানে তাদের মামাতো ভাই-বোন, (শোভন, টোকন, মিতু)
তাদের ঘিরেই কাহিনীর এগিয়ে যাওয়া।
ছোট্ট সুপ্রভার বেড়ে উঠা, ইমনের ইউনিভার্সিটিতে প্রবেশ, প্রভৃতিসহ আরো নানান মজার এবং বিষাদময় কিছু কাহিনী।
অন্যতম মজার কাহিনী গুলোর বর্ণনা যখন ইমন জীবনের প্রথম তার ছোট চাচার সাথে দাদাবাড়িতে যায়।
আর অন্যতম বিষাদময় কাহিনী হলো, মায়াবী মেয়ে সুপ্রভার মৃত্যু। কীভাবে সেটা হয়েছিল সেটা নাহয় উপন্যাস পড়েই জেনে নিবেন।
এত কিছুর মধ্যেও সুরাইয়ার অপেক্ষা শেষ হয় না। তার স্বামী হাসানের জন্যে
অপেক্ষা। কত কল্পনা সুরাইয়ার, যেদিন তার স্বামী ফিরে আসবে সেই দিনটা নিয়ে।
সুরাইয়ার বিশ্বাস,
যেদিন ইমনের বিয়ে হবে, সেদিন রাতে তার স্বামী হাসান ফিরে আসবে। অবশেষে ইমনের বিয়ে হয়, কিন্তু কার সাথে? মিতু নাকি মুন্নির সাথে?
সেটা না হয় কিছুটা চমক থাকুক এখানে।
বিয়ের রাত ইমনের। বারান্দায় বসে আছে সুরাইয়া। হঠাৎ কলিংবেলের আওয়াজ!! তবে
কি সত্যি ফিরে এলো হাসান? এতদিনের এত অপেক্ষার তবে কি অবসান ঘটবে এবার?
সেটা উপন্যাস পুরোটা শেষ করলেই উত্তর পেয়ে যাবেন।
পছন্দের কিছু লাইন,
"জীবিতদের জন্যে মানুষ অপেক্ষা করে, মৃত মানুষদের জন্যে কেউ অপেক্ষা করে না"
"পৃথিবীতে সবচেয়ে আনন্দময় জিনিসগুলো বিনামুল্যে পাওয়া যায়। যেমন: জোছনা, বর্ষার দিনের বৃষ্টি..."
"যেসব ছেলে খুব সুন্দর, তারা রুপবতী মেয়ে পছন্দ করে না। সুন্দরী মেয়েদের তারা নিজেদের রাইভ্যাল মনে করে"
"নরম মেয়েগুলি কঠিন বিপদে সামাল দিতে পারে। শক্ত মেয়েগুলি পারে না, চিৎ হয়ে পড়ে যায়"
"সুইসাইড করা মেয়েটা জানতেও পারলো না, এই পৃথিবীতে তার জন্যে কত ভালোবাসা জমা হয়ে ছিলো"
লিখেছেন-
সুমাইয়া আহমেদ,
শিক্ষার্থী বিবিএ (মার্কেটিং ৪র্থ বর্ষ), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments